ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের বিধান ও দলিল সম্পর্কে জানুন - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ আছে

ঈদে মিলাদুন্নবী কি?ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ এই প্রশ্নটি অনেক মুসলমান ভাই ও বোনেরা করেন। আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের জানাবো ঈদে মিলাদুন্নবীর কি -ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ তা নিয়ে। এবং এটি আমরা জানাবো পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদিসের ভিত্তিতে। তাই ঈদে মিলাদুন্নবীর কি - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ এ বিষয়ে জানতে হলে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে আপনাকে পড়তে হবে।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের বিধান ও দলিল সম্পর্কে জানুন
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আগে অবশ্যই ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা জায়েজ কিনা সে সম্পর্কে জেনে নিবেন। তাই আপনি যদি জানতে চান কবে এই ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৪। তাহলে আজকের এই পোষ্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আর জেনে নিন ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৪ কত তারিখ।

ঈদে মিলাদুন্নবী কি এবং কবে পালিত হয়

ঈদে মিলাদুন্নবী হচ্ছে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বা (সাঃ) এর জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ উৎসবে দিন মুসলমানদের মাঝে এই দিনটি ভক্তি শ্রদ্ধা মর্যাদা এবং বেশ উৎসবে সাথে পালন করা হয়। তবে এই দিনটি পালন নিয়ে ইসলামি আলেমদের মাঝে অনেক বিতর্ক রয়েছে। এই দিনটিকে বাংলাদেশের মানুষ ঈদে মিলাদুন্নবী বলে। আর পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের কাছে এ দিনটি নবী দিবস নামে পরিচিত। ঈদে মিলাদুন্নবী হিজরীর সনে তৃতীয় মাস অর্থাৎ রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে পালিত হয় ।

ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ আছে

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব আর সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শ সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হলো দীনের নব উদ্ভাবিত বিষয়। দীনেরমধ্যে নব উদ্ভাবিত সবকিছুই বিদআত প্রত্যেক বেদাত ভ্রষ্টতা আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিনাম জাহান্নাম (মুসলিম হাদিসঃ-১৫৩৫)

এই মিলাদ বা ঈদে মিলাদুন্নবী রাসুল (সাঃ)এর সময় ছিল না সাহাবাদের সময় ছিল না এমনকি তাবেই বা তাবে- তাবেয়ীদের যুগে ছিল না। সেই আমলেইসলামের সোনালী যুগ ছিল না তা কিভাবে সুন্নত বা নফল আমল হয় অর্থাৎ এটি একটি বেদআত। কোন ব্যক্তির জন্ম দিবস পালন করা ইসলামের সম্মতি নাই জন্মদিন বা জন্ম দিবস পালন করা খ্রিস্টান হিন্দু বৌদ্ধসহ অমুসলিমদের রীতিনীতি। যা ইসলাম কখনো অনুমোদন দেয় না। তাই এটা মুসলমানদের পরিত্যাগ বিধর্মী তথা অমুসলিমদের ব্যবহার বিধি আচার অনুষ্ঠান যতই ভালো হোক না কেন তা মুসলিমদের পালন করা জায়েজ না। এ বিষয়ে রাসূল করিম (সাঃ) বলেছেন যে ব্যক্তি আমাদের এই দিনে নতুন কিছু উদ্ভাবনকরবে যা এর কোন অংশ নয় তবে সেটা মারদুদ বা প্রত্যাখান হবে।

বিশ্ব বিখ্যাত বীর গাজী সালাউদ্দিন আইয়ুব নবী (রঃ) ইরাকের একটি প্রদেশের গভর্নর হিসাবে আবু সাঈদ মোজা ফখরুদ্দিন কুকুবুরীকে নিযুক্ত করেন। এই মোজাফখরুদ্দিন কুকুবুরীসর্বপ্রথম এই মিলাদ বা ঈদে মিলাদুন্নবী এর প্রচলন শুরু করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে ঈদে মিলাদুন্নবী প্রথম শুরু হয়। ৬০৪ হিজরীতে যা রাসুল (সাঃ) এর মৃত্যুর প্রায় ৬০০ বছর পরে এই রীতি একজন ব্যক্তি চালু করেন সুতরাং এটি বেদআত। সুতরাং ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা জায়েজ নয়। এই রীতি ইসলাম সমর্থন করে না।

ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের বিধান ও দলিল

ইসলাম হচ্ছে পরিপূর্ণ একটি জীবন ব্যবস্থা আল্লাহ তায়ালা এর পক্ষে থেকে নাযিলকৃত সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হচ্ছে আল কুরআন এবং রাসূল (সাঃ) এর দেখানো পথ নির্দেশনায় হচ্ছে পরিপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। এই ইসলাম ব্যবস্থায় নতুন কিছু সূচনা করাকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা করা হয়েছে। আল্লাহ সুভানাহু অয়া তা আলা বলেন। ‘’বলুনঃ যদি তোমরা সত্যিই আল্লাহ ওকে ভালোবাসো তবে আমার অনুসরণ কর তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবে এবং তোমাদের অপরাধ সমূহ কে ক্ষমা করে দিবেন। (সূরা আল ইমরান )

এবং সূরা আল আরাফ এর ৭:৩) আয়াতে বলা হয়েছে তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল হয়েছে। তোমরা তার অনুসরণ কর আর আল্লাহ ছাড়া আর কোন আউলিয়া অনুসরণ করো না।
সর্বোত্তম কিতাব হচ্ছে আল কোরআন এবং সর্বশ্রেষ্ঠ দিক নির্দেশনা হচ্ছে। রাসূল (সাঃ) এক দিক নির্দেশনা আর সবচেয়ে খারাপ বিষয় হচ্ছে দিনে নতুন বিষয় উদ্ভাবন করা। এ বিষয়ে নবী কারীম (সাঃ) বলেন। যে কেউই আমাদের এই দিনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করবে যা এর কোন অংশ নয় তবে তা প্রত্যাখান হবে। ‘’বুখারী মুসলিম "

উপরোক্ত আয়াত ও হাদিস থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট জানা যায়। যে মহান আল্লাহ ইসলামের প্রতিটি বিষয়ে নবী (সাঃ) কে অনুসরণ করার নির্দেশনা দিয়েছে রসূল (সাঃ) এর জন্ম সোমবার আর তিনি এই দিনেই নফল রোজা রাখতেন। সুতরাং আমরাও এই দিনে রোজা পালন করে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করতে পারি তবে আল্লাহ তায়ালার নেকি লাভ করতে পারব এটা হচ্ছে ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের বিধান ও দলিল।

কিভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা উচিত

আমাদের দেশের কিছু মুসলিম জাতি ১২ই রবিউল আউয়াল অনেক উৎসবের মধ্যে দিয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন করে থাকে। যা ইসলামের রীতি অনুযায়ী বেদআত। যা পালন করা জায়েজ নয় তবে রাসূল ( সাঃ) এই দিনে রোজা রাখতেন তাই। ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করতে হলে সোমবার দিনে রোজা রেখে পালন করতে হবে তবেই আল্লাহতালা এর নিকটবর্তী হতে পারবেন ।

ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি

এবছর ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার একদিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। সাধারণত অনেকে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে রাতে ইবাদত করে থাকে। অন্যদিকে এটি একটি খুশির দিন হওয়ায় পুরো দেশে ছুটি ঘোষণা করা থাকে। তাই এ বছর যেদিন ঈদে মিলাদুন্নবী হবে ঐদিন ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ছুটির ঘোষণা করা হয়েছে। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে – ধর্ম মন্ত্রানালয়

শেষ কথাঃ ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ আছে

উপরোক্ত আলোচনা সাপেক্ষে এতক্ষণে নিশ্চয় ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৪ কত তারিখ - ঈদে মিলাদুন্নবী কি ও কেন পালন করা হয় জানতে পেরেছেন। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্পর্কে কোন মতামত থেকে থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আজকের পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। এবং নতুন নতুন তথ্য পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাহারাব্লগ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

in-article

Post Page Ad After Post Ends